আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ জাওজযানের রাজধানী শেবারগান নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে দাবি করেছে তালেবান। আফগানিস্তানজুড়ে লড়াই ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা। এই নিয়ে দেশটির দ্বিতীয় আরেকটি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিল বিদ্রোহীরা। আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও যুদ্ধবাজ নেতা আব্দুল রশিদ দোস্তামের শক্তিকেন্দ্র শেবারগান। এখানে তার সমর্থকরাই তালেবান বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। আফগান বাহিনীগুলোকে সহায়তা করতে দেড়শ জন লোক শহরটিতে গিয়েছিলেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জানিয়েছে বিবিসি। তালেবান প্রথমে শুক্রবার তীব্র লড়াইয়ের এক পর্যায়ে গভর্নর কম্পাউন্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল, পরে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে।
যাইহোক, ওই অঞ্চলের কাউন্সিল প্রধান বাবুর এশচি বিবিসিকে জানিয়েছেন, পুরো শহরের নিয়ন্ত্রণ এখন বিদ্রোহীদের হাতে, শুধু সামরিক ঘাঁটি ছাড়া, এখানে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই চলছে। অঞ্চলটির ডেপুটি গভনর্র একটি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছেন, সরকারি কর্মকর্তারা বিমানবন্দরের দিকে পিছু হটেছে। শহরটির একটি কারাগারের দখল নিয়ে সব বন্দিদের মুক্ত করার কথা জানিয়েছে তালেবান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা গেছে, শনিবার শেবারগান শহরে তালেবান বিদ্রোহীদের হামলার পর শত শত বন্দি ওই কারাগার থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন; জানিয়েছে বিবিসি। তালেবান দ্রুত গতিতে এগোতে থাকায় দেশটির অন্যান্য অংশেও সহিংসতা তীব্র হচ্ছে, এতে হাজার হাজার বেসামরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। নিমরোজ প্রদেশের জারাঞ্জ শহর প্রথম প্রাদেশিক রাজধানী শুক্রবার তালেবানের হাতে যার পতন হয়। চাপে থাকা অন্য প্রাদেশিক রাজধানীগুলোর মধ্যে পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত ও দক্ষিণাঞ্চলীয় কান্দাহার এবং লস্কর গা উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে রাজধানী কাবুলে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সাবেক মুখপাত্রকে গুলি করে হত্যা করেছে তালেবান এবং ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে। আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনী বলেছে, লস্কর গায় তালেবানের কিছু জ্যেষ্ঠ কমান্ডারসহ বহু যোদ্ধা নিহত হযেছেন; তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি সামরিক বাহিনীর এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সরকার তাদের নাগরিকদের অবিলম্বে দেশটি ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে।
Leave a Reply