কাগজ প্রতিবেদক ॥ রাস্তার পাশে মেইন দরজা বন্ধ করে, নির্ধারিত কোচিং সেন্টারের জায়গা পরিবর্তন করে, বন্ধু বা পরিচিত জনের বাড়ীতে, গরুর গোয়াল ঘরে গ্রামে শহরে এমনকি শহরতলীতে অনেক নামী-দামী কোচিং সেন্টার, আবাসিক স্কুল, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অবাধে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র জানিয়েছে। সরকারী কলেজের পেছনে, টালিপাড়া, কোর্টপাড়া, টালিপাড়া, পুর্ব, পশ্চিম মজমপুর, থানাপাড়া, কাটাইখানা মোড়, হরিশংকরপুর, কালীশংকরপুর, পিয়ারাতলা, মিরপুর, ভেড়ামারা, খোকসা, দৌলতপুর ও কুমারখালী উপজেলার কলেজ মোড়, বাজার সংলগ্ন, বিভিন্ন আবাসিক ছাত্রবাসেও চলছে এসব কোচিং বাণিজ্য। করোনা সংক্রমন বৃদ্ধির সাথে সমস্ত স্কুল কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়, মাদ্রাসা বন্ধ থাকলেও এক শ্রেনীর অসৎ কোচিং ব্যবসায়ীরা বন্ধ রাখেনি তাদের ব্যবসা।
সুত্রটি বলছে, কোচিং ব্যবসার সাথে জড়িত একটি চক্র দীর্ঘদিন থেকে প্রাইভেট পড়ানোর নাম করে রীতিমত স্কুল খুলে বসেছে। একটি ছোট্র ঘরের মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে জনপ্রতি সর্বনি¤œ ১ হাজার থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে কোচিং ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব কোচিং ব্যবসায় সাধারণত ৬ষ্ঠ শ্রেনী থেকে দশম শ্রেনী এবং ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসের উচ্চতর গণিত, ফিজিক্স, ক্যামিষ্ট্রি, জেনারেল ম্যাথ, ইংরেজী, বাংলা দ্বিতীয় পত্র রয়েছে। সরজমিনে বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টারের খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, মাত্র দুই সপ্তাহ আগেও এসব কোচিং সেন্টারগুলোতে একেবারে প্রকাশ্যে ঠাসাঠাসি করে কোচির্ং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ১৮ দফা নির্দেশনায় স্কুল-কলেজ ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না। এমন সংবাদের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামের নির্দেশে গতকাল দুপুরে কুষ্টিয়া সদর সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মুহায়মিনুল আল জিহানের নেতৃত্বে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাইফুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স সদর উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে শহরের চৌড়হাসে ‘প্রতীতি স্কুল’কে আবাসিক কোচিং চালানোর অপরাধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এ ব্যাপারে নিবাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মুহায়মিনুল আল জিহান জানান, প্রতীতি স্কুল দীর্ঘদিন থেকে গোপনে তাদের বিদ্যালয়ের ভেতরে শোবার খাট, বিছানাপত্র, খাবারের ব্যবস্থা রেখে প্রায় ৩০ জন ছাত্রকে নিয়মিত ভাবে আবাসিক কোচিং করিয়ে আসছিল। এ খবরে সেখানে উপস্থিত হয়ে প্রতীতি বিদ্যালয়ের ভেতরে ছাত্র-ছাত্রীদের শয়নকক্ষ, বিছানাপত্র, কম্পিউটারসহ আসবাব পত্র দেখা যায়। এবং আবাসিক কোচিং করানোর অপরাধে মালিক নজরুল ইসলামকে নগদ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় আবাসিক কোচিং রাখা শিশুদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে কোচিং সেন্টার ত্যাগ করার নির্দেশও প্রদান করা হয়। অন্যথায় আগামীতে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সংক্রমন রোগ ( প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মুল) আইন ২০১৮ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান। এ ছাড়াও অবৈধভাবে দোকান খোলা রাখা এবং মাস্ক পরিধান না করার জন্য এন এস রোড এবং শহরতলীর ত্রিমোহনী এলাকায় ৩ টি মামলায় ১ হাজার ৫০০ টাকা অর্থদন্ড আদায় করা হয়।
Leave a Reply