মিরপুর প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের উপর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের উপর হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ৩ জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড সুলতানপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, কামরুল, আবু সাইদ ও শামীম। তারা সকলেই একই এলাকার বাসিন্দা ও পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনিত (নৌকার) প্রার্থী হাজী এনামুল হকের সমর্থক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুল রহমানের সমর্থকরা আওয়ামীলীগ মনোনিত (নৌকার) প্রার্থী হাজী এনামুল হকের কর্মী-সমর্থকের উপর অতর্কিত হামলা করে। এতে ৩জন সমর্থক গুরুতর আহত হয়। এ পৌরসভা নিবাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দীতা করছেন তিনি জন প্রার্থী। তবে ভোটের মূল লড়াই হচ্ছে আওয়ামী লীগ মনোনিত (নৌকার) প্রার্থী হাজী এনামুল হক ও মোবাইল মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আরিফুল রহমানের। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। মিরপুর থানার (ওসি) গোলাম মোস্তফা এ ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একটি সুত্র জানিয়েছে, মুলত শেখ আরিফুল রহমান ওরফে ‘ কেপ টাউন’ আরিফুল নামেই বিশেষ পরিচিত। রাজনৈতিক পরিচয় সম্পর্কে যতদুর জানা যায় সে একজন জাতীয়তাবাদী মনা ব্যক্তি। বেশ কয়েক বছর আগে জনৈক ব্যক্তির পরিচয়ের সুত্রে সুদুর আফ্রিকার কেপ টাউনে পাড়ি জমান। বেশ কিছুদিন চাকুরী তার পরেই সেখানে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের মালিক হন বলে জানা যায়। সে সুত্রে সে এলাকা ও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কেপ টাউনে চাকুরী দেয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নেয়ারও এলাকায় নানা গুঞ্জন রয়েছে। বছর কয়েক আগে একটি বে-সরকারী টেলিভিশনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার আর্শিবাদ পুষ্ঠ হয়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন প্রতিনিধিও হয়েছেন। সেমি পাকা পৈত্রিক বাড়ীর পাশেই আলিশান প্রাসাদ গড়ে তুললেও আত্ম উপলব্ধিকারী পিতা-মাতা সে প্রাসাদে দীর্ঘদিন উঠেননি। বছরান্তে ঈদে-চাঁদে এলাকায় কিছু মানুষের মাঝে শাড়ী, লুঙ্গি, নগদ টাকা, গরু, বাছুর বিতরণ করে এলাকায় তথাকথিত জনপ্রতিনিধি বনে যান। এবার হটাৎ করেই তিনি মিরপুর পৌরসভার মেয়র হওয়ার সাধে মাঠে নেমেছেন। সম্প্রতি ফেসবুকে একটি বানোয়াট ভিডিও পোষ্ট দিয়ে তিনি আলোচনায় আসার চেষ্টা করেছেন। আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতার আর্শিবাদ নিয়ে তিনি আওয়ামীলীগের মেয়র প্রার্থীর সাথে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে আহতও করছেন। সুত্র বলছে, তার সাহস আছে বটে তবে উৎস্য কোথায় জানা নেই। এ ব্যাপারে মুঠোফোনে শেখ আরিফুল রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, নির্বাচনে মাঠে আসার আগে থেকেই বর্তমান মেয়র এনামুল হাজী তার এবং তার সমর্থকদের উপর নানা রকম অত্যাচার, হামলা, পোষ্টার ছিড়ে ফেলে আসছে। গতকাল সন্ধায় তিনি খবর পান এনামুল হাজীর কয়েকজন লোক তার বাড়ীতে হামলা চালাতে আসছে। এ সময় তার সমর্থকরা তাকে বাড়ীর মধ্যে নিরাপদে নিয়ে যায়। এবং এনামুল হাজির লোকজনকে বাধা দেয় এতে তাদের একটি মটরসাইকেলসহ কয়েকজন আহত হয়। এবং যারা আহত হয়েছেন তারা সকলেই মেয়রের লোক বলে জানিয়েছেন। ব্যক্তি জীবনে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে সম্পকৃক্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০৩ সালে ফারুক চৌধুরীর সাহেবের সাথে আমার কলেজ পড়াকালীন সময়ে পরিচয় হয়। তিনি যুবকদের জন্য বেশ কিছু ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করেন। তার পর ২০০৪ সালে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে যান। পরে ফারুক চৌধুরী বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন বলে শুনেছেন। তিনি বিএনপি বা জাতীয় পার্টির কোন পদে নেই। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন বলেও দাবী করেন।
Leave a Reply