কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠত হলেও নির্বাচনের ফলাফল ঘোষনার পরপরই কুষ্টিয়া -৪ ( কুমারখালী ও খোকসা) আসনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ ( ট্রাক) ও বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জের (নৌকা) সমর্থকেরা সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েন। পৃথক পৃথক কয়েকটি স্থানে এসব সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। রোববার (৭ জানুয়ারি ) রাতে কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নে কালুপাড়া এবং যদুবয়রা ইউনিয়নের দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামে সংঘর্ষ ও জোতমোড়া বিলে ফসল তসরুপের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন। তার মধ্যে তোফাজ্জেল হোসেন ( ট্রাক সমর্থিত) ও মানিক হোসেন ( নৌকা সমর্থিত) নামে দুইজন কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানা গেছে, ভোট গণনার পরে বাগুলাট কালুপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় নবনির্বাচিত সাংসদ আব্দুর রউফের বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থক বাড়িতে ফিরছিলেন। সেসময় পরাজিত সাংসদ সেলিম আলতাফ জর্জের লোকজন তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আব্দুর রউফ গ্রুপের তোফাজ্জেলসহ কয়েকজন আহত হন। এরপর যদুবয়রার দক্ষিণ ভবানীপুর গ্রামে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে জর্জ সমর্থিত মানিক আহত হলে গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে,রবিবার রাতে ট্রাক সমর্থিত ইসরাইল শেখের প্রায় ৭ শতাংশ জমির পেঁয়াজের চারা কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে তাঁর প্রায় ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। তিনি যদুবয়রা ইউনিয়নের ছাতিয়ান গ্রামের মৃত হারু শেখের ছেলে। এছাড়াও পান্টি, চাঁদপুর ও চর সাদিপুর ইউনিয়নে উভয়পক্ষের বেশকিছু ঘরবাড়ি ভাংচুরের খবর পাওয়া গেছে। সোমবার (৮ জানুয়ারী) সকালে জোতমোড়া বিলের মাঠে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ইসরাইল শেখের পেঁয়াজের চারা কেটে ফেলা হয়েছে। উৎসুক কৃষকরা ভিড় করেছে। এসময় ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক জানান, তিনি সকালে মাঠে গিয়ে দেখেন তাঁর জমির দুই – তৃতীয়াংশ পেঁয়াজের চারা কেটে ফেলা হয়েছে। এতে তাঁর প্রায় ২০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। তাঁর ভাষ্য, ট্রাক মার্কায় ভোট দেওয়ায় নৌকার লোকজন তাঁর পেঁয়াজের চারা কেটে দিয়েছে। তিনি থানায় অভিযোগ করবেন। কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আকিবুল ইসলাম জানান, দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্খাজনক। এছাড়াও বেশকিছু ঘরবাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল ভর্তি রয়েছেন কয়েকজন। এ বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুল হক জানান, উৎসবমূখর পরিবেশে সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নির্বাচন পরবর্তী কয়েকটি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তৎপর রয়েছে প্রশাসন।
Leave a Reply