কাগজ প্রতিবেদক ॥ টাকা না থাকলে এই সমাজে তার কোন মূল্য নাই। তার কোনো বন্ধু নাই। পরিবারের কাছে তার কোন মূল্য নেই। সে যতই অসুস্থ হোক না কেন, আর যতই ভালো ছেলে হোক না কেন? সে সবার থেকে পৃথিবীতে খারাপ ছেলে। আল্লাহ মাফ করে দিও। সোস্যাল মিডিয়ায় এমন আবেগঘন ও অর্থাভাবের একটি স্ট্যাটাস দিয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মিরাজ হোসেন (২৩) নামের এক কলেজ ছাত্রের বিষপানে আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত ছাত্র মিরাজ কুমারখালীর গোবরা চাদপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে ও কুমারখালী সরকারি কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তবে নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, মিরাজ হোসেন দীর্ঘদিন দাঁতের ব্যাথায় ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সকালে হঠাৎ দাঁতের ব্যাথা বৃদ্ধি পাই। এরপর দুপুরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষপান করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়িতে বিষপানের কথা জানায়। বিষয়টি জানতে পেরে স্বজনরা স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে ওয়াশ করেন। পরে সন্ধায় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি হয়। রাতে ৮ টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, কলেজ ছাত্রের এমন অকাল মৃত্যুতে এলাকায় চলছে শোকের মাতাম। তাকে শেষবারের মত একবার দেখতে তার বাড়িতে ভিড় করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী। শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাঁর মা, বাবা ও তাঁর বড় ভাই হেলাল উদ্দিন। এবিষয়ে নিহত ছাত্রের ফুফাতো ভাই শাহিন বলেন, মিরাজ খুব ভাল ছেলে। দাঁতের রোগে ভুগছিল। ভারতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ গতকাল ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষ পান করে। পরে রাতে মারা যান। চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশিদুজ্জামান তুষার বলেন, ছেলেটি খুব ভাল ও পরশ্রমি ছিলেন। খুব কষ্ট করে একটি বিল্ডিং বাড়ি বানিয়েছিল। কিন্তু ওর ( ছাত্র) অসুখ ছিল। হয়তো সেই অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। কুমারখালী থানার ওসি মো. মহসিন হোসাইন জানান, ওই ছাত্র দীর্ঘদিন দাঁতের ব্যাথায় ভুগছিল। ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়না তদন্ত ছাড়ায় শুক্রবার দুপুরে মরদেহটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
Leave a Reply