এনএনবি : উত্তরপশ্চিম ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ে হামলাকে সন্ত্রাসী ঘটনা বলেই ঘোষণা করেছে পুলিশ। হামলায় অন্তত ২ জন নিহত হয়।
এই মৃত্যুর ঘটনার পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেছেন, দেশে বাড়তে থাকা ইহুদিবিদ্বেষ পরাভূত করতেই হবে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ উত্তর ম্যানচেস্টারের ক্রাম্পসলে হিটন পার্ক হিব্রু কংগ্রেগেশন সিনাগগে লোকজনের ওপর গাড়ি তুলে দেওয়া ও একজনের ছুরিকাহত হওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পরে সন্দেহভাজন একজনকে লক্ষ্য করে পুলিশ কর্মকর্তারা গুলি ছুড়লে ওই ব্যক্তিও নিহত হন। হামলার ঘটনায় নিরাপত্তারক্ষীসহ ৫ জন আহতও হয়েছে। অন্য আরও তিনজনের অবস্থা গুরুতর। নিউ স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের বাইরে সন্ত্রাস-বিরোধী পুলিশের সহকারী কমিশনার লরেন্স টেলর বলেন, এই হামলার ঘটনাকে সরকারিভাবে সন্ত্রাসী হামলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। তদন্তের আওতায় দুইজন গ্রেপ্তার হয়েছে।
হামলার ঘটনা তদন্তে গ্রেটার ম্যানচেষ্টারের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করছে সন্ত্রাস-বিরোধী পুলিশ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, সিনাগগে ছুরি হামলা চালানো ব্যক্তি “ইহুদিদেরকে আক্রমণ করেছে কারণ তারা ইহুদি।” ডাউনিং স্ট্রিটে এক জরুরি বৈঠক শেষে ইহুদিদের ওপর এই সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “জঘন্য এক ব্যক্তি একাজ করেছে।” “আজ ইহুদিদের পবিত্র দিন ইয়োম কিপ্পুর পালন হচ্ছিল। এর মধ্যে এক জঘন্য লোক সিনাগগে ইহুদিদের ওপর হামলা চালাল, কারণ তারা ইহুদি এবং যুক্তরাজ্যের ওপর হামলা চালাল আমাদের মূল্যবোধের জন্য”, বলেন স্টারমার।
যুক্তরাজ্যের ইহুদি সম্পদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনারা আরও বেশি পুলিশ উপস্থিতি দেখতে পাবেন। আপনাদের প্রাপ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমার ক্ষমতার আওতায় যা কিছু করা সম্ভব আমি করব।” স্টারমার আরও বলেন, “যুক্তরাজ্য সেই দেশ যারা ইহুদি সম্প্রদায়কে স্বাগত জানিয়েছে এবং আশ্রয় ও আবাসন দিয়েছে। এখানে ইহুদিবিদ্বেষ নতুন নয়। তবে এই বিদ্বেষ আবারও বাড়ছে। যুক্তরাজ্যকে তা আবারও পরাভূত করতে হবে।” বিবিসি জানায়, যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তথ্যে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে ইহুদিদের প্রতি ঘৃণাজনিত অপরাধ দ্বিগুণ বেড়েছে। পুলিশের রেকর্ডে ২০২৪ সালের মার্চ নাগাদ ৩ হাজার ২৮২ টি ঘৃণাজনিত অপরাধের ঘটনা রেকর্ড হয়েছে, এর আগের বছরে যে সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫৪৩।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণাজনিত অপরাধ বাড়লেও ইহুদিরা আরও বেশি হারে ঘৃণাজনিত হামলার নিশানা হচ্ছে। ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর বলছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মুসলিম এবং ইহুদি উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ঘৃণাজনিত অপরাধ বেড়ে গেছে।
Leave a Reply