কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে হত্যার হুমকি দিয়ে চতুর্থ (১১) ও হেফজী (১২) শ্রেণীর দুই মাদ্রাসা ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে এক বাড়ি মালিকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলা নম্বর ২৮, তারিখ- ১৬ সেপ্টেম্বর। মামলায় পলাতক আসামী ও ওই বাড়ি মালিকের নাম মো. শহিদুল ইসলাম (৭২)। তিনি পৌরসভার দুর্গাপুর এলাকার মৃত নুরুল হক বিশ্বাসের ছেলে। তিনি উপজেলা সাব রেজিট্রি কার্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদ সুত্রে জানা গেছে, মাসিক ১০ হাজার টাকা ভাড়ার চুক্তিতে প্রায় সাত মাস পূর্বে মহিলা মাদ্রাসাটি দুর্গাপুর এলাকার মো. শহিদুল ইসলামের বাড়িতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে বর্তমানে বিভিন্ন শ্রেণির ৩৩ জন ছাত্রী ও ৩ জন শিক্ষিকা রয়েছেন। মাদ্রাসার একটি কক্ষে বাড়ি মালিক ও তাঁর স্ত্রী থাকেন। মাদ্রাসার মোবাইল চার্জ দিতে শিক্ষার্থীরা তাঁদের কক্ষে যাওয়া আসা করে। সেই সুযোগে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রায় মাসখানেক আগে প্রথমে যৌন নির্যাতন করেন বাড়ির মালিক মো. শহিদুল ইসলাম। এরপর হত্যার হুমকি দিয়ে ওই ছাত্রীকে নিয়মিত যৌন করে আসছিল বাড়ির মালিক। গত বুধবার হেফজী পড়ুয়া আরেক ছাত্রী মোবাইল চার্জ দিতে গিয়ে শহিদুলের অপকর্ম দেখে ফেলে। এসময় শহিদুল ওই ছাত্রীকে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব করেন। কিন্তু ওই ছাত্রী টাকা নিতে অসম্মতি জানালে দুইজনকেই হত্যার হুমকি প্রদান করেন এবং পরে দেখে ফেলা ছাত্রীকেও জোরপূর্বক যৌন নির্যাতন করেন। ঘটনার শিকার এক ছাত্রী জানায়, মাঝে মাঝেই দাদু (বাড়িওয়ালা) ওকে (ছাত্রী) ডেকে আনতে বলত। না ডাকলে হত্যার ভয় দেখাত। গত বুধবার আমি খারাপ অবস্থায় দেখে ফেললে আমাকে টাকা দিতে চান। আমি টাকা না নিলে আমার সাথেও খারাপ কাজ করে। পরে অনেক খাবার খাইয়ে কাউকে না বলার হত্যার হুমকি দিয়েছিল। নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর বাবা ও মামলার বাদী বলেন, মামলা করেছি। তবে তাঁর অভিযোগ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার মেয়ে এমন ঘটনার শিকার হয়েছে। কুমারখালী ফয়জুল উলুম ক্বওমী মহিলা মাদ্রাসা পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আকামউদ্দিন আকাই বলেন, কয়েকদিন আগে জানতে পেরেছি ছাত্রীদের হত্যার হুমকি দিয়ে যৌন নির্যাতন করেছেন বাড়ির মালিক। জানতে চাইলে গত বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে অভিযুক্ত শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এমন কাজ আমি করতে পারিনা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’ কুমারখালী থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, শীলতাহানির অভিযোগে এক ছাত্রীর বাবা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় মামলা করেছেন। আসামী পলাতক রয়েছেন।
Leave a Reply