কাগজ প্রতিবেদক ॥ এ এক অন্যরকম উন্মাদনা। যে উন্মাদনার ছোঁয়া লেগেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের তো বটেই স্পর্শ করেছে সতের কোটি মানুষের হৃদয়ে। দেশীয় অর্থায়নে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তর ‘পদ্মা সেতু’ উদ্বোধন উপলক্ষেই দেশব্যাপী এমন উচ্ছ্বাস এমন উন্মাদনা। দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা কুষ্টিয়ার ২৩ লাখ মানুষও পিছিয়ে নেই এই মাহেন্দ্রক্ষণের অংশীদার হতে। কুষ্টিয়া পৌরসভার পক্ষ থেকে দিনব্যাপী আয়োজন ছিলো বর্ণাঢ্য। সকাল ৯টায় কুষ্টিয়া পৌরসভার পক্ষ থেকে বের হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র আনোয়ার আলীর নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পৌরসভার সকল কাউন্সিলর, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ অংশ নেয়। পদ্মা সেতুর আদলে তৈরী পদ্মা সেতুর প্রতিকৃতি মাথায় নিয়ে নেচে গেয়ে উল্লাস করতে থাকেন অংশগ্রহনকারীরা। এসময় স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শ্লোগানও দিতে থাকেন তারা। পরে শোভাযাত্রাটি কুষ্টিয়া কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধু ম্যূরালে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান পৌর মেয়র আনোয়ার আলী, পৌরসভার প্যানেল মেয়র শাহীন উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, , পৌরসভার সকল কাউন্সিলর, পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর পূত্র পারভেজ আনোয়ার তনু পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এর পর সকাল ১০টায় কালেক্টরেট চত্বরে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন নেতৃবৃন্দ। বড় পর্দায় সরাসরি পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দৃশ্য দেখানো হয়। এদিকে দুপুরে কুষ্টিয়া পৌরসভার বিজয় উল্লাস চত্বরে যেমন খুঁশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। পদ্মা সেতু সম্পর্কিত সাজে অংশগ্রহন করেন অনেক প্রতিযোগী। সন্ধ্যায় পৌর বিজয় উল্লাস চত্বরে পৌরসভার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পৌর মেয়র আনোয়ার আলীর সভাপতিত্বে অলোচনায় সভায় মুখ্য আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, বোধদয় কুষ্টিয়ার সভাপতি অ্যাডভোকেট লালিম হক। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন নানা বাধা, নানা সমালোচনার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের পদ্মা সেতু বাস্তবে রূপ নিল। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাঁর দৃঢ়চেতা মনোভবই দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম সেতু ‘পদ্মা সেতু’ বাস্তবায়িত হলো। এশিয়ান ব্যাংক সেতুতে অর্থায়ন থেকে সরে দাঁড়ালেও শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপে দেশীয় অর্থে বাস্তবায়িত হলো পদ্মা সেতু। এজন্য তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি পৌর মেয়র আনোয়ার বলেন স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান হয়েছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেই এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। শত ষড়যন্ত্র,শত বাধা পেরিয়ে বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে তিনি দেশের সতের কোটি মানুষের প্রত্যাশা পুরণ করেছেন। আজ তাঁর এমন সাফল্যকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন বিশ্বনেতারাও। কুষ্টিয়া পৌরসভার এমন বর্ণাঢ্য আয়োজনে তৃপ্ত পৌর মেয়র আনোয়ার আলী বলেন আজ পৌরসভার সকল কাউন্সিলর কর্মকর্তা, কর্মচারী আজ পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ঐতিহাসিক ক্ষণের অংশীদার হতে পেরেছেন। আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কুষ্টিয়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী(পানি) সাবিনা ইসলাম। পরে আতশবাজীতে আলোকিত হয় পুরো পৌর চত্বর।
Leave a Reply