কাগজ প্রতিবেদক ॥ কুষ্টিয়ার মিরপুরে পরকীয়ার অভিযোগে সাইফুল ইসলাম (২৭) নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে জুতোর মালা পরানো হয়। একই সাথে তাঁকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয় নেতারা। সোমবার এ মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মিরপুর থানা পুলিশ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানা হেফাজতে নিয়েছে। আটককৃতরা হলেন,মিরপুর উপজেলার মালিহাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা আকরাম হোসেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নওয়াব আলী ও স্থানীয় জোরদার সিদ্দিক আলী। ঘটনার পর থেকে সাইফুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মালিহাদ ইউনিয়নের আশান নগর এলাকার সেন্টু আলীর ছেলে ইটভাটার শ্রমিক সাইফুল ইসলাম প্রতিবেশি আনসার সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের স্ত্রী এক সন্তানের জননী (২৫) এর সাথে অবৈধ কর্মে লিপ্ত হয় বলে কথা রটে। এ সময় প্রতিবেশি কিছু লোক তাদের দুজনকে আটক করে। পরদিন রোববার সকাল ১১টায় আশাননগর মোড়ে তাদের গ্রাম্য সালিশ হয়। সালিশে স্থানীয় সালিশকারী আকরাম হোসেন বিচারের রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সাইফুল ইসলামকে জুতোর মালা গলায় দিয়ে অর্ধেক গ্রাম ঘোরায়, সেই সাথে ৩০টি লাঠির আঘাত এবং ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এদিকে পরকীয়ার কারণে আব্দুল কুদ্দুস তার স্ত্রীর সাথে সংসার করতে আপত্তি জানালে কুদ্দুসের স্ত্রীকে সালিশি বৈঠকে তালাক করানো হয়। পরে স্থানীয়রা সাইফুল ইসলামের সাথে ওই নারীর বিয়ে দিতে চাইলে ওই নারী আপত্তি জানালে তাকে মায়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। জানা যায়,আব্দুল কুদ্দুস ঢাকায় আনসার সদস্য হিসাবে চাকুরী করে। যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাদের সংসার মনোমানিল্য চলছিলো। আমিরুল ইসলাম নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, “সাইফুলকে পুরো গ্রামের লোকজনের সামনে জুতোর মালা গলায় দিয়ে নেতারা ঘুরিয়েছে। সেই সাথে সাইফুল ইসলামকে লাঠি দিয়ে অমানবিকভাবে পিটিয়েছে। দেশে তো আইন রয়েছে এমন্য গ্রাম্য ভাবে শালিশ করে শারিরিক নির্যাতন এ যুগে বিরল।” মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত ) শুভ্র প্রকাশ দাস জানান,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচারের নামে লাঠি দিয়ে মারধরের ভিডিও দেখে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থল থেকে জুতোর মালাসহ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply